ফসল পাট
রোগের নাম :
কালোপট্টি (Black Band)
রোগের অন্য স্থানীয় নামঃ
নেই
রোগের কারণ :
ছত্রাক
প্রধান ক্ষতির লক্ষণ:
প্রথমে আক্রান্ত গাছের গোঁড়ার দিকে মাটি হতে ৩-৫ ফুট উপরে বাদামি রঙের দাগ পড়তে দেখা যায়। ক্রমশ এই দাগ কালচে রঙ ধারণ করে। দাগ বৃদ্ধির সাথে সাথে এটা কাণ্ডকে ঘিরে ফেলে। এ জন্য এই রোগকে কালোপট্টি রোগ বলে। এই বেষ্টনী ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠতে থাকে। একাধিক কালোপট্টি গাছের কাণ্ডে দেখা দিতে পারে। ধীরে ধীরে এরা অনেক সময় যুক্ত হয়ে সমস্ত কাণ্ডকে কালো করে ফেলে। আক্রান্ত গাছ নিস্তেজ হয়ে যায় এবং পাতা ঝরে পড়ে। অনেক সময় গাছের কাণ্ড এতই দুর্বল হয় যে বাতাসে ভেঙ্গে যায়। আক্রান্ত গাছের কাণ্ডে অসংখ্য কালো কালো পিকনিডিয়া দেখা যায়। পাতা বিহীন মৃত কাণ্ডগুলোর গায়ে হাত দিয়ে ঘষা দিলে হাত কালো হয়ে যায়।
দমন ব্যবস্থা:
পাটের কালোপট্টি রোগ নিয়ন্ত্রনের জন্য রোগ মুক্ত গাছ থেকে সুস্থ বীজ সংগ্রহ করতে হবে। বপনের পূর্বে পাট বীজ ছত্রাক নাশক দ্বারা শোধন করে নিতে হবে। বীজ শোধনের জন্য ভিটাভেক্স ২০০ (০.৪%)/ প্রোভেক্স-২০০ (০.৪%) ৪গ্রাম ছত্রাক নাশক প্রতি কেজি বীজে ব্যবহার করতে অথবা রসুন বাটা ১২৫গ্রাম/ কেজি বীজ এর সাথে মিশিয়ে ব্যবহারে যথেষ্ট সুফল দেয়। বপনের আগে বীজ শোধনের ফলে রোগের প্রকোপ অনেক কমে যায়। শোধন করা সম্ভব না হলে বপনের আগে বীজ ভালভাবে শুকাতে হবে। পর্যায়ক্রমে ধান বা অন্যান্য ফসল চাষ করলে রোগ সংক্রামক হতে পারে না। পাটের শিকড়, আবর্জনা ও পরিত্যক্ত অংশ একত্রিত করে পুড়িয়ে ফেললে রোগের উৎস কমে যায়। ফলে রোগ সংক্রামণ হ্রাস পায়। আক্রমন বেশী হলে ডাইথেন এম-৪৫ অথবা ম্যানার এম-৪৫ অথবা এনডোফিল এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ঔষধ মিশিয়ে গাছের গোঁড়ার মাটিতে ২/৩ দিন পর পর স্প্রে মেশিনের সাহা্য্যে ২/৩ দিন ছিটিয়ে এ রোগের আক্রমন কমানো সম্ভব। (তথ্যসুত্রঃ পাট কেনাফ মেস্তার রোগ ও নিয়ন্ত্রন- বিজেআরআই)
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে :
বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে :
কাণ্ড
অন্যান্য:
আক্রমন বেশী হলে মেঙ্কজেব ৯ ডাইথেন এম-৪৫) ২.৫গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা
তথ্যের উৎস:
উদ্ভিদ রোগবিজ্ঞান ও শস্যের রোগ। লেখকঃ হাসান আশরাফউজ্জামান। । পাট কেনাফ মেস্তার রোগ ও নিয়ন্ত্রন। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট।