চীনাবাদাম এর ফসলের চাষপদ্ধতির তথ্য

বর্ণনা ইংরেজি নামঃ Peanut/Groundnut. বৈজ্ঞানিক নামঃ Arachis hypogaea চীনা বাদাম Leguminosae পরিবারের একটি দ্বিবীজ পত্রী তেল জাতীয় ফসল। বাদামের দানায় শতকরা প্রায় ৫০ভাগ তেল ও ২৫ ভাগ আমিষ রেয়েছে। চীনা বাদাম একবর্ষজীবি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ।
চাষপদ্ধতি

চীনা বাদামের চাষ উপযোগী জলবায়ুঃ বাংলাদেশের সর্বত্র চীনাবাদামের চাষ করা যায়। উষ্ণ ও অবউষ্ণ মণ্ডলের আবহাওয়ায় চীনা বাদামের বৃদ্ধি ভালো হয়। পাঁচ মাস ব্যাপী গরম আবহাওয়া ও কমপক্ষে ৫০০-১০০০মিমি বৃষ্টিপাত চীনা বাদামের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। হালকা বেলে দোআঁশ মাটি চীনা বাদাম চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।বিশেষত নদীর ধারে বা চর অঞ্চলের বেলে মাটিতে চীনা বাদাম চাষ করা যেতে পারে। পর্যাপ্ত সূর্য কিরণ এবং তাপমাত্রা ২৫ -৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিশেষভাবে উপযোগী।

চাষ উপযোগী মাটিঃ চীনাবাদাম চাষের জন্য বেলে দোআঁশ, দোআঁশ এবং চরাঞ্চলের বেলে মাটি উপযুক্ত। সূত্রঃ বারি কৃষি প্রযুক্তি হাতবই

জমি তৈরিঃ ৩-৪ টি চাষ ও মই দিয়ে জমি ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। জমিতে আগাছা থাকলে তা তুলে ফেলে দিতে হবে। জমির চারপাশে নালা থাকলে পরবর্তীকালে সেচ দেওয়া এবং পানি নিকাশের সুবিধা হয়। সূত্রঃ বারি কৃষি প্রযুক্তি হাতবই

বীজ বপনের সময়ঃ রবি মৌসুমে অর্থাৎ কার্তিক মাসে (মধ্য- অক্টোবর থেকে মধ্য-নভেম্বর) চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

বীজ হারঃ

জাত অনুযায়ী বীজের পরিমাণ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

জাতের নাম

বীজের পরিমাণ কেজি/ একর(খোসাসহ)

মাইজচর বাদাম(ঢাকা-১)

৩৮-৪০

ঝিঙ্গা বাদাম (এসিসি-১২)

৪২-৪৪

বাসন্তী বাদাম (ডিজি-২)

৪২-৪৪

ত্রিদানা বাদাম (ডিএম-১)

৪৪-৪৬

বারি চীনাবাদাম-৫

৪০-৪২

বারি চীনাবাদাম-৬

৪০-৪২

বারি চীনাবাদাম-৭

৪০-৪২

বারি চীনাবাদাম-৮

৩৮-৪০

বারি চীনাবাদাম-৯

৩৮-৪০

বিনা চীনাবাদাম-১

৪৮-৫০

বিনা চীনাবাদাম-২

৪৮-৫০

বিনা চীনাবাদাম-৩

৫০-৫২

বিনা চীনাবাদাম-৪

৪৮-৫০

বিনা চীনাবাদাম-৫

৪৮-৫০

বিনা চীনাবাদাম-৬

৪৮-৫০

 চীনাবাদামের অঙ্কুরোদগম পরীক্ষাঃ মাটি বা প্লাস্টিকের ছোট পাত্রের২/৩ ভাগ মাটি বা বালি দিয়ে ভরতে হবে। তাঁর উপর ১০০ টি বা ৫০ টি করে বীজ বসিয়ে এর উপর আধা ইঞ্চি মাটি দিয়ে বীজ ঢেকে দিতে হবে। এরূপ ৪টি পাত্রে বীজ দিতে হবে। পাত্রের বালু প্রয়োজনমত ভিজা রাখতে হবে। বীজ গজানো পরীক্ষায় পাত্রটি ঘরের মধ্যে মাচায় রাখতে হবে। বীজ গজানোর সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য ৮-৯ দিন অপেক্ষা করতে হবে। তারপর যে সংখ্যক বীজ গজালো তাঁর মাধ্যমে চীনাবাদাম বীজ গজানোর হার নির্ণয় করা যায়। বীজ গজানোর পর যদি শতকরা ৮০-৯৫ ভাগ হয় সেক্ষেত্রে ২টি করে বীজ দিতে হবে এবং ৭০-৮০ ভাগ হলে ৩টি করে বীজ প্রতি স্থানে দিতে হবে। শতকরা ৭০ ভাগের নিচে হলে বীজ হিসেবে ব্যবহার যোগ্য নয়।    

বপন পদ্ধতিঃ বীজ সারিতে বুনলে সারির দূরত্ব ৩০সেমি এবং প্রতি সারিতে গাছের দূরত্ব ১৫সেমি রাখতে হবে। বীজ মাটির ২.৫-৪.০সেমি নিচে রোপণ করতে হবে। 

 সারের পরিমাণঃ চীনাবাদামের জমিতে নিম্নলিখিত হারে ব্যবহার করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

তথ্যের উৎস ১। বারি কৃষি প্রযুক্তি হাতবই। ২। বিনা উদ্ভাবিত উন্নত কৃষি প্রযক্তি পরিচিতি। ৩। উচ্চমুল্য ফসলের উৎপাদন প্রযুক্তি(প্রশিক্ষণ মডিউল-৪) NCDP Project.