টমেটো এর রোগের তথ্য

রোগের নাম রোগের কারণ ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে প্রধান ক্ষতির লক্ষণ
লিফকার্ল বা কুঁকড়ানো
ভাইরাস পাতা , ফুল , সম্পূর্ণ গাছ এই রোগে আক্রান্ত গাছ খর্বাকৃতি হয়। পাতার গায়ে ঢেউয়ের মত ভাজের সৃষ্টি হয় ও পাতা ভীষণ ভাবে কোকড়ায়ে যায়। বয়স্ক পাতা পুরু ও মচমচে হয়ে যায়। আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে পাতা মরে যায়। গাছে অতিরিক্ত শাখা প্রশাখা বের হয় এবং গাছ ফুল ও ফল ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
বুশি স্টান্ট ( লিফ হপার নামক পোকা দ্বারা ছড়ায়)
ভাইরাস পাতা , কচি পাতা , সব এ রোগে গাছ আক্রান্ত হলে গাছের উপরের অংশ কুকড়ায়ে যায়। পাতা মুড়িয়ে যায় ও চামড়ার ন্যায় পুরু মনে হয়।
নাবী ধ্বসা বা লেট ব্লাইট বা মড়ক
ছত্রাক কাণ্ড , পাতা , কান্ডের গোঁড়ায় পাতার উপর ফ্যাকাশে অথবা ফিকে সবুজ রঙের গোলাকার অথবা এলোমেলো পানি ভেজা দাগ পড়ে। কুয়াশাছন্ন মেঘলা আবহাওয়ায় দাগ সংখ্যা ও আকার দ্রুত বাড়তে থাকে। গাছের পাতা ও কাণ্ড বাদামী থেকে কালচে আকার ধরণ করে। আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে গাছের কাণ্ড ও সবুজ ফলেও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। রোগের লক্ষণ দেখা দেবার ৩-৪ দিনের মধ্যে গাছ ঝলসে যায় ও দ্রুত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
নেতিয়ে পড়া বা ধ্বসা রোগ
ছত্রাক, ব্যকটেরিয়া পাতা , কচি পাতা ধ্বসা ধরা রোগ দ্বারা চারা গাছ দুই ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রথমত অঙ্কুরোদগম হবার পূর্বে মাটির নিচে থাকাকালীন বীজ ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং আক্রান্ত বীজ অঙ্কুরগমেই নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে যে পরিমাণ বীজ বীজতলায় বপন করা হয় সে পরিমাণ চারা পাওয়া যায় না। অপরিপক্ব ও খারাপ জাতের বীজ হতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ রকমের ক্ষতি হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত অঙ্কুরদগম হবার পূর্ব হতে যে সমস্ত বীজ এ রোগের জীবাণু দ্বারা রক্ষা পায়ে সতেজ চারা গাছ রুপে বেড়ে উঠে , তাদের অনেকেই অঙ্কুরোদগমের কয়েকদিনের মধ্যে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে কাণ্ড মাটির সমতল ( কাণ্ড যেখানে মাটি স্পর্শ করে) সর্বপ্রথম আক্রান্ত হয়। রোগ দেখা দেবার সাথে সাথে গাছের শিকড় পচতে আরম্ভ করে এবং মাটির উপরে কাণ্ডে সংকোচন দেখা দেয়। এতে পরে চারা গাছটি মাটির সমলাইন বরাবর নুয়ে পড়ে মারা যায়।
আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট
ছত্রাক কাণ্ড , পাতা , ফল গাছের বয়স্ক পাতার এ রোগের লক্ষণ প্রথম দেখা যায়। আক্রান্ত গাছের পাতার উপর কাল বা বাদামী রংয়ের বৃত্তাকার দাগ পড়ে। ক্ষত স্থানটি অনেক গুলি ছোট বড় বৃত্তের সমষ্টি। পাতার মত কাণ্ডে ও ফলে বৃত্তাকার দাগ দেখা যায়।
মোজাইক রোগ ভাইরাস আগা , পাতা , ডগা , কচি পাতা , ফুল আক্রান্ত গাছের পাতা স্বাভাবিক সবুজ রঙ হারিয়ে হালকা সবুজ কিংবা ফ্যাকাশে হলুদ রঙের বিভিন্ন আকৃতির ছোপ ছোপ রঙ ধারণ করে আক্রান্ত বেশি হলে পাতা শুকিয়ে যায়। চারা অবস্থায় গাছ আক্রান্ত বেশি হলে খর্বাকৃতির হয় বা মরে যায়। আক্রান্ত গাছে ফুল ও ফল কম হয়।