পেঁয়াজ এর বীজ ও বীজতলার তথ্য

বীজ ও বীজতলার প্রকারভেদ

হালকা দোঁ-আশ মাটিতে উপযুক্ত পরিমাণ জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে চাষ করলে পেঁয়াজ বেশ বড় ও ভারী হয় এবং সেগুলো অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। পেঁয়াজ চাষে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হয়। ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরে করে এবং প্রতি বর্গ মিটার বীজতলায় ১০-১৫ কেজি শুকনা গোবর ও  ২ কেজি ছাই মিশিয়ে মাটি সমান করে জমি তৈরি করুন। বীজতলা ১০০ সেমি চওড়া এবং ২টি বীজতলার মাঝে ৩০ সেমি চওড়া ও ২০ সেমি গভির নালা রাখুন। প্রতি হেক্টর জমির জন্য ২৫০ বর্গ মিটার আয়তনের চারা তৈয়ার করুন। চারামারা যাওয়া রোগ না লাগার জন্য ২৫ গ্রাম ডায়থেন এম- ৪৫ ২০ লিটর পানিতে মিশিয়ে বীজতলায় স্প্রে করুন।উই বা পিঁপড়া লাগার  সম্ভাবনা থাকলে কেরোসিন মেশানো ছাই ছিটান। বোনার আগে বীজ অল্প করে ভিজিয়ে ঘষে নিন। ছাই ১ ভাগ বীজের সাথে ৯ ভাগ ছাই/ মিহি বালি মিশিয়ে বীজ বুনুন। ২০ সেমি পর পর ১০ সেমি লাইন টেনে ১টি করে বীজ ০.৫-১.০ সেমি গভিরে বীজ বুনে ঢেকে দিন। বেশি গভিরের বীজ গজাতে অসুবিধা হয়। সকালে  চারার উপর শিশির জমা পানি কাঠি/ হাতা নেড়ে মাটিতে ফেলে দিন। বীজ বোনার পর হালকা সেচ দিয়ে বীজতলা ভালভাবে ভিজিয়ে দিন এবং তারপর প্রয়োজন অনুসারে ১-২ দিন অন্তর সেচ দিন। বোনার প্রায় ৫-৭ দিন পর বীজ অংকুরিত হয়ে চারা বের হবে। বীজ বপনের ৫০-৫৫ দিন পর চারা যখন ৬-৮ ইঞ্চি/১৫ – ২০ সেমি  লম্বা হয় তখন জমিতে রোপণ করুন।

ভাল বীজ নির্বাচন

প্রত্যায়িত বীজেরমানঃ

১। বিশুদ্ধতা ( কম পক্ষে ওজনের %): ৯৭.০০

২।অপদ্রব্য( সর্বাধিক ওজনের %): ৩.০০

৩। অন্য বীজ ( সর্বাধিক ওজনের %):   ক)  অন্য ফসলের  বীজ ( পরীক্ষিত নমূণার সব গুলো; সর্বাধিক % সংখ্যা):  কেজিতে ১০টি

খ )  মোট আগাছার বীজ (পরীক্ষিত নমূণার সব গুলো; সর্বাধিক % সংখ্যা):  কেজিতে ১০টি

৪।গজানোর হার( কম পক্ষে  %):  ৬৫.০০

৫।আর্দ্রতা(সর্বাধিক %): ৮.০০

৬।বাস্পনিরোধ পাত্রে আর্দ্রতা (সর্বাধিক %): ৬.০০।ভাল বীজ পেকেটজাত । ট্যাগ/লেভেলে তার মান লেখা থাকে । ভাল বীজ তরতাজা /উজ্জ্বল, এর গজানোর হার ও ফলন বেশি। পাত্রের সব বীজ পরিষ্কারি পরিচ্ছন্ন, স্বাভাবিক ও একই আকার-প্রকারের। চিটা ও আগাছার মাত্রা, রোগ, পোকা ও অন্য বীজের মিশাল মুক্/ নগণ্য  বা খুবই কম । এতে আবাদ খরচ কমে, তবে  ফলন বাড়ে ।   

হলুদ ট্যাগ/লেভেলে বিস্থস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এবং সাদা/ নীল ট্যাগ/লেভেলে সরকারের তত্বাবধানে উৎপাদিত ও পরীক্ষিত ।

বীজতলা প্রস্তুতকরণ ৪০-৪৫ দিন বয়সের চারা। সাড়ে ৬ হাত/২৭০সেমি × সোয়া ২হাত /১০০সেমি আকারের প্রতি বীজতলার জন্য ২৫-৩০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। খরিফ মৌসুমে চাষের জন্য জুলাই-আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র) ও রবি মৌসুমে চাষের জন্য ফেব্রুয়ারী-মার্চ (মাঘ-ফাল্গুন) মাসে বীজ তলায় বীজ বপন করতে হয়।বীজতলা সাড়ে ৬ হাত × সোয়া ২ হাত আকারের এবং ৩-৪ ইঞ্চি উচু হতে হবে। প্রতি বীজতলায় ২৫-৩০ গ্রাম বীজ বুনতে হয়। প্রতি বিঘা জমিতে চারা উৎপাদনের জন্য সাড়ে ৬ হাত × সোয়া ২ হাত আকারের ১২০-১৩০ টি বীজতলার প্রয়োজন। বীজ বপনের আগে বীজতলা শোধন করে নেয়া উচিৎ। প্রতি লিটার পানিতে ৪ গ্রাম হারে ব্লুকপার মিশিয়ে বীজতলার মাটি শোধন করে নেয়া উচিত অথবা বীজতলার উপর ৪ ইঞ্চি/১০ সেমি পুরু করে খড় বিছিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বীজতলা শোধন করা যেতে পারে। প্রতি কেজি বীজের সাথে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম (যেমনঃ ব্যাভিষ্টিন) মিশিয়ে বীজ শোধন করা যায়। প্রতিটি বীজতলায় ৩-৫ ঝুড়ি পচা গোবর এবং ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে এবং উপরে সামান্য কাঠের ছাই ছড়িয়ে বীজতলা তৈরী করতে হবে। এক হেক্টর জমিতে উপযুক্ত চারা তৈরী করা জন্য বর্গমিটার বীজতলার প্রয়োজন হয়।
বীজতলা পরিচর্চা পেঁয়াজের কন্দ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ফুলের কুঁড়ি দেখামাত্র ভেঙ্গে দিতে হবে।
তথ্যের উৎস SEED AND FIELD STANDERD OF NOTIFIED AND NON NOTIFIED CROPS- SCA/MoA.