পাট এর রোগের তথ্য

রোগের নাম রোগের কারণ ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে প্রধান ক্ষতির লক্ষণ
এনথ্রাকনোজ (Anthracnose)
ছত্রাক কাণ্ড এ রোগে চারাগাছ আক্রান্ত হলে কাণ্ডে ও পাতায় বাদামি রঙের দাগ দেখা যায়। বয়স্ক গাছে কাণ্ডের উপর কালো ক্ষত চিহ্ন দেখা যায়। অনেক সময় একাধিক দাগ একত্রিত হয়ে বড় রকমের ক্ষতের সৃষ্টি করে এবং কালক্রমে তা বৃদ্ধি পেয়ে কাণ্ড কে ঘিরে ফেলে। অনেক জায়গায় আক্রান্ত ছাল ফেটে যায় এবং ভিতরের আঁশ ফাটলের মধ্য দিয়ে ছোবড়ার মত বেরিয়ে আসে এবং শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায় । এ রোগে কান্ডে গিটের সৃষ্টি হওয়ায় ঐ স্থান সহজে পচে না । আঁশ কালো দাগ বিশিষ্ট ও গিটযুক্ত হয়। ফলে আঁশের মুল্য কমে যায় ।
কাণ্ডপচা ( Stem Rot)
ছত্রাক কাণ্ড বীজ অঙ্কুরোদগমের সময় বীজদল এবং এর নিচের কাণ্ডের উপর গাঢ় বাদামি রঙের দাগ পড়ে। এই দাগ ক্রমে বড় হয়ে সম্পূর্ণ বীজকে পচিয়ে ফেলে। এর ফলে মাটি হতে বীজ গজানোর পূর্বেই গাছ মরে যায়। আবার কখনও মাটির উপরে আসার পর বীজ গজিয়ে পচে যায়। অনেক সময় অঙ্কুরিত বীজ হতে উৎপন্ন চারাগাছ কিছুটা বড় হওয়ার পর গরম আবহাওয়ায় চারা গাছের কাণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আক্রান্ত গাছ ভাঙ্গিয়া নেতিয়ে পড়ে। বড় চারাগাছে প্রথমে পাতার ফলক আক্রান্ত হয়। এর পর পাতা হতে রোগ বোঁটায় ছড়িয়ে পরে। আক্রান্ত পাতার ফলক দুর্বল হইয়া অনেক সময় ঢলে কাণ্ডের গায়ে লেগে যায়। এর ফলে দাগ ক্রমশ বাকলে বৃদ্ধি পায়, পরে বাকল পচে যায়। বাকলের এই পচনের ফলে অনেক সময় গাছ মারা যায়।
কালোপট্টি (Black Band) ছত্রাক কাণ্ড প্রথমে আক্রান্ত গাছের গোঁড়ার দিকে মাটি হতে ৩-৫ ফুট উপরে বাদামি রঙের দাগ পড়তে দেখা যায়। ক্রমশ এই দাগ কালচে রঙ ধারণ করে। দাগ বৃদ্ধির সাথে সাথে এটা কাণ্ডকে ঘিরে ফেলে। এ জন্য এই রোগকে কালোপট্টি রোগ বলে। এই বেষ্টনী ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠতে থাকে। একাধিক কালোপট্টি গাছের কাণ্ডে দেখা দিতে পারে। ধীরে ধীরে এরা অনেক সময় যুক্ত হয়ে সমস্ত কাণ্ডকে কালো করে ফেলে। আক্রান্ত গাছ নিস্তেজ হয়ে যায় এবং পাতা ঝরে পড়ে। অনেক সময় গাছের কাণ্ড এতই দুর্বল হয় যে বাতাসে ভেঙ্গে যায়। আক্রান্ত গাছের কাণ্ডে অসংখ্য কালো কালো পিকনিডিয়া দেখা যায়। পাতা বিহীন মৃত কাণ্ডগুলোর গায়ে হাত দিয়ে ঘষা দিলে হাত কালো হয়ে যায়।