ফসল | পোকামাকড় নাম | ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে | পোকামাকড় চেনার উপায় | প্রধান ক্ষতির লক্ষণ |
---|
পেঁয়াজ | পেঁয়াজের ঘোড়া পোকা | আগা , পাতা , ডগা , কচি পাতা , সব | অল্পবয়সী পোকা এক ধরনের মথ। ডিম ফুটে সবুজ রঙের ২-২.৫ সেমি কীড়া ফলের ভিতরে বাস করে।
| পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ক্ষতি করে। |
লাউ | রেড পামকিন বিটল | পাতা , কচি পাতা , ফল , ফুল | এ পোকা দেখতে ক্ষুদ্র লাল রঙের | পাকা ঝাঝড়া করে ফেলে। আক্রমণ বেশি হলে চারা গাছেভ আগা, ফুল ও কচি ফল আক্রান্ত হয়। |
তরমুজ | জাব পোকা
 | কাণ্ড , পাতা , ডগা , কচি পাতা , ফল , ফুল | পোকা দেখতে খুবই ক্ষুদ্র। এদের পাখা বা পাখাহীন উভয় অবস্থায় দেখা যায়। | গাছের কচি কাণ্ড, ডগা ও পাতার রস খেয়ে ক্ষতি করে। |
টমেটো | জাব পোকা
 | কাণ্ড , পাতা , ডগা , কচি পাতা | পোকা দেখতে ক্ষুদ্র সবুজ,খুবই নরম দেহের পোকা । | পাতা ও কচি ডগা থেকে রস চুষে খায় |
পাট | কালো বিছা পোকা (Black Hairy Caterpillar)
 | পাতা | পূর্ণ বয়স্ক মথের রঙ কালো পাখা ধূসর বাদামী রঙের পাখার উপর কালো ফোটা আছে। পিছনের পাখা জোড়া কমলা রঙের। মথের পাখার উপরের শিরা ও কিনারা বরাবর অনেকগুলো ছোট ছোট কালো ফোটা আছে এবং ফোটাগুলো একত্রে মিশে মোটা কালো দাগের সৃষ্টি করে। এ মথের কীড়া প্রাথমিক অবস্থায় রং সবুজ, ক্রমেই বাদামী ও পরে কালো রঙের হয়। এদের শরীর ঘন শুঙ্গ দ্বারা আবৃত থাকে। পুনাঙ্গ কীড়া লম্বায় ৪সেমিঃ। | জুন মাসের প্রথম হতে জুলাই মাস পর্যন্ত আক্রমনের সময় । প্রাথমিক অবস্থায় কীড়া পাতার সবুজ অংশ খায় এবং ক্রমেই বড় হতে থাকে পরে পাতা খায় ও গাছের বৃদ্ধি প্রতিহত করে। এ পোকা গাছের গৌণ পোকা হিসেবে চিহ্নিত। |
মরিচ | ক্ষুদে মাকড় (মাইট)
 | আগা , কাণ্ড , পাতা , কান্ডের গোঁড়ায় | এ পোকা দেখতে অত্যন্ত ছোট, সাধারণত হাত লেন্সের সাহায্য ছাড়া দেখা যায় না। পোকা উপবৃত্তাকার, উজ্জ্বল, হলদে সবুজ বর্ণের আট পা বিশিষ্ট।
| মাইট গাছের রস শোষণ করে এবং পানি স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়। পাতা ফ্যাঁকাসে, মোচড়ানো এবং নিচের দিকে নৌকার মত বাঁকানো হয়। পাতা চামড়ার মত হয়ে যায় এবং শিরাগুলো মোটা হয়। পাতা এবং কচি কাণ্ড লালচে বর্ণের হয়। ফুলের কুঁড়ি বাঁকানো এবং মোচড়ানো হয়। পাতার নিচের পৃষ্ঠে জাল দেখা যায়।
|
মরিচ | থ্রিপস
 | পাতা | উকুনের মত ছোট চিকন কালো ও লম্বাটে। বাচ্চা সাদা।
| পাতা সাদা হয়ে কুঁকড়ে যায়।
|
মরিচ | জাব পোকা
 | পাতা , ডগা , কচি পাতা | পোকা দেখতে ক্ষুদ্র সবুজ,খুবই নরম দেহের পোকা
| পাতা ও ডগার রস চুষে খেয়ে পাতাকে বিবর্ণ করে ও পাতা,ফুল কুঁকড়ে যায়। |
চীনাবাদাম | জ্যাসিড / শোষক পোকা | পাতা | ক্ষুদ্র সবুজ পোকা। এদের দেহ লম্বা। রং বাদামী সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। এরা পাতার নিচের পৃষ্ঠে থাকে। | এর ফলে পাতার অগ্রভাগ বাদামী বর্ণ ধারণ করে। আক্রান্ত পাতা কুকচে যায়। |
তরমুজ | থ্রিপস | পাতা | পূর্ণবয়স্ক ও বাচ্চা পোকা পাতা থেকে রস চুসে খায়। ফলে ফলন কমে যায়। | পূর্ণবয়স্ক ও বাচ্চা পোকা পাতা থেকে রস চুসে খায়। ফলে ফলন কমে যায়।
|
পাট | কাতরি পোকা (Indigo caterpillar) | কাণ্ড , পাতা , কচি পাতা | পূর্ণ বয়স্ক মথের রঙ কালো পাখা ধূসর বাদামী রঙের পাখার উপর কালো ফোটা আছে। পিছনের পাখা জোড়া কমলা রঙের। মথের পাখার উপরের শিরা ও কিনারা বরাবর অনেকগুলো ছোট ছোট কালো ফোটা আছে এবং ফোটাগুলো একত্রে মিশে মোটা কালো দাগের সৃষ্টি করে। এ মথের কীড়া প্রাথমিক অবস্থায় রং সবুজ, ক্রমেই বাদামী ও পরে কালো রঙের হয়। এদের শরীর ঘন শুঙ্গ দ্বারা আবৃত থাকে। পুনাঙ্গ কীড়া লম্বায় ৪ সেমিঃ। | জুন মাসের প্রথম হতে জুলাই মাস পর্যন্ত আক্রমণ করে থাকে । প্রাথমিক অবস্থায় কীড়া পাতার সবুজ অংশ খায় এবং ক্রমেই বড় হতে থাকে পরে পাতা খায় ও গাছের বৃদ্ধি প্রতিহত করে। এ পোকা গাছের গৌণ পোকা হিসেবে চিহ্নিত। |
পাট | কাটুই বা লেদা পোকা | পাতা , ডগা , কচি পাতা | পূর্ণবয়স্ক পোকা একটি গাঢ় বাদামী রঙের মথ। সামনের পাখনা লম্বা, কম প্রসস্থ; গাঢ় বাদামী রঙের, প্রত্যেকটি পাখনায় তিনটি কালো ছাপ এবং কয়েকটি সাদা অসম দাগ রয়েছে। পিছনের পাখনা ধূসর সাদাটে।পূর্ণবয়স্ক কীড়া ১.৫ ইঞ্চি বা ৩.৮ সেমি লম্বা এবং কালচে সবুজ রঙের। এদের পিঠে কালচে বাদামী ও হলুদ রঙের দাগ আছে। এদের গায়ে শুঙ্গ থাকে না এবং দেহের পাশে দুই সারি সাদা ফোটা আছে। | বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি হতে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত এই পোকার আক্রমণ দেখা যায় । কাটুই বা লেদা পোকা শূককীট অবস্থায় পাট গাছের ক্ষতি করে। পোকা চারা গাছের কচি পাতা আক্রমণ করে পরে ডগা কেটে ফেলে। গাছের উচ্চতা ১২০-১৫০ সে। মি বা ৩-৪ মিঃ হওয়া পর্যন্ত এই আক্রমণ চলতে থাকে। প্রথমে শূককীটগুলি গাছের কচি পাতা ছিদ্র করে খায়। বড় হওয়ার সাথে সাথে সম্পূর্ণ পাতা খেতে থাকে। এই পোকা সাধারণতঃ দিনে মাটির নিচে থাকে এবং রাতে পাট গাছকে আক্রমণ করে। খাওয়ার পর এই পোকা আবার মাটিতে চলে যায়। এই পোকা মাঠের প্রায় ৮৫% পাট ফসল নষ্ট করে। ইহা ৌণ পোকা হিসাবে চিহ্নিত । |
পাট | হলুদ মাকড়
 | কাণ্ড , পাতা | পূর্ণ বয়স্ক মাকড় আকারে খুবই ক্ষুদ্র ( ০.১৭ মি মি ও ০.০৯ মি মি চওড়া) এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে এদের দেখা যায় না। স্ত্রী মাকড় প্রথমে সাদা থাকে। পরে আস্তে আস্তে হলুদ বর্ণের হয়। এই জন্য এদের কে সাদা মাকড়ও বলা হয়। স্ত্রী মাকড় ডিম্বাকৃতি এবং শরীরের উপরে মাঝখানে লম্বালম্বি একটা সাদা দাগ আছে। এদের চারজোড়া পা আছে। পুরুষ মাকড়ের শরীর মাঝখানে চওড়া এবং পিছন দিকে সরু। সাধারণত এরা পিছন দিক উচু করে রাখে।
| এপ্রিল হতে সেপ্টেম্বর এই সম্যে আক্রমণ করে । ইহা মুখ্য মাকড় হিসাবে চিহ্নিত । হলুদ মাকড় আগার কচি পাতার নিচের দিকে থাকে এবং আক্রমণ করে । কচি পাতার রস চুষে খায়। এতে পাতা কুকড়ে যায় এবং তামাটে রং ধারন করে । শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত পাতা পরে যায় । আক্রমণ বেশী হলে পাতা ঝরে পড়ে, গাছের ডগা নষ্ট হয়ে যায় । ফলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় ও পড়ে শাখা-প্রশাখা বের হয় । হলুদ মাকড়ের আক্রমণ গাছের বৃদ্ধি ১৫-১৬ সেমি পর্যন্ত কমে যেতে পারে ।
|
পাট | ঘোড়া পোকা
 | আগা , পাতা , ডগা , কচি পাতা | ডিম থেকে শূককীট বের হওয়ার পরপর এদের রং থেকে ঘিয়ে এবং ক্রমশ সবুজ হয় পুর্ণতাপ্রাপ্ত কীড়া প্রায় ১.৫ ইঞ্চি ও গায়ের রং সবুজ । পূর্ণবয়স্ক পোকা হালকা বাদামি রঙের মথ। সামনের পাখার ফোঁটা ও আঁকাবাঁকা কাল দাগ আছে। পুরুষ মথের শুঙ্গ পেকটিনেট ও স্ত্রী মথের শুঙ্গ সুত্রাকার ধরনের। | বৈশাখের শুরু হতে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত জৈষ্ঠের মাঝামাঝি হতে আষাঢ়ের মাঝামাঝি পোকার সংখা মারাত্মক ভাবে বাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বের হওয়ার পর পরই এরা পাট গাছের কচি ডগা ও পাতা আক্রমন করে। প্রথম অবস্থায় পাতা ছিদ্র করে খায় এবং বড় হতে থাকলে পুরো পাতা খেয়ে ফেলে। কোন কোন সময় কচি ডগা খেয়ে ফেলে এবং বারংবার কচি ডগাকে আক্রমন করার ফলে গাছের আগা নষ্ট হয়ে যায় এবং শাখা- প্রশাখা বের হয়। এতে পাটের ফলন ও আঁশের গুনগত মান কমে যায় । ইহা মুখ্য পোকা হিসাবে চিহ্নিত ।
|