ফসল | পোকামাকড় নাম | ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে | পোকামাকড় চেনার উপায় | প্রধান ক্ষতির লক্ষণ |
---|
পটল | পটলের কাঁটালে/ কাঁঠালে পোকা | কাণ্ড , পাতা , ডগা , ফল , শিকড় , ফুল | - | পূর্ণ বয়স্ক বিটল ও গ্রাব উভয়েই পাতা খায় । আক্রন্ত পাতা ঝাঁঝরা করে, পরে পাতা শুকিয়ে যায় এবং ঝরে পাড়ে
|
পটল | পটলের সাদা মাছি পোকা | আগা , পাতা , ডগা , সব , ফল , শিকড় , কান্ডের গোঁড়ায় | - | পূর্ণ বয়স্ক ও বাচ্চা উভয়ই ক্ষতি করে । চারা গাছ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত এরা পাতার রস খায় । আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয় ।পাতা কুকড়ে যায়।
|
পটল | পটলের থ্রিপস পোকা | পাতা , ডগা , সব , ফল , ফুল | - | পোকা গাছের কচি পাতা ও ফুলের রস শুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে ও ফল ধরেনা । এরা কচি ফলেও আক্রমণ করে তাই ফল বড় হলে ফলের উপর দাগ দেখা যায়। |
বেগুন | জ্যেসিড/ শোষক পোকা/ হোপার/ শ্যামা পোকা | পাতা , ডগা , কচি পাতা | হালকা সবুজ রংয়ের ফড়িং জাতীয় পোকা, পাখার পিছনে কাল দাগ আছে। বাচ্চা ও সবুজ ধরনের।
| কচি পাতার রস চুষে খাওয়ায় পাতা কুকড়ে নিচের দিকে বেকে আসে, পাতা বিবর্ন হয়ে তামাটে রং ধারণ করে ,পরে মারা যায়। |
বেগুন | ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা | ডগা , ফল | ছোট আকারের মথ , ৮-১২ মি মি লম্বা সাদা রং এর দুই জোড়া পাখাতে ছিট ছিট বাদামি দাগ থাকে, স্ত্রী মথ একটু বড়
| ডগা ও ফল ছিদ্র করে কুড়ে খায়। আক্রান্ত ডগা ঢলে পড়ে শুকিয়ে যায় । ফলে আক্রমন হলে তা খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায় |
ভুট্টা | আদার কন্দ ছিদ্রকারি পোকা | ডগা | এক ধরণের মথ | পোকার ডিম থেকে বের হওয়ার পর সদ্যজাত কীড়া কন্দ ছিদ্র করে ভেতরে ঢুকে এবং কন্দের ভিতেরর অংশ খায়। আক্রান্ত গাছ হলুদ হয়ে যায়। পরে কন্দের পচন ধরে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে গাছ থেকে কোনো ফলন পাওয়া যায় না। এ পোকা আদার রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ পোকা ডিম পাড়া এবং বাড়নের জন্য ছত্রাক আক্রান্ত আদা গাছ পছন্দ করে। রোগাক্রান্ত কন্দের ভিতর পোকার কীড়া এবং পিউপা দেখা যায়। এ ছাড়াও পূর্ণ বয়স্ক পোকাগুলো আদা গাছে ব্যাকটেরিয়া জনিত উইল্ট/ পচনের বাহক হিসেবে কাজ করে। |
চীনাবাদাম | জ্যাসিড / শোষক পোকা | কাণ্ড , পাতা , ডগা , কচি পাতা | ক্ষুদ্র সবুজ পোকা। এদের দেহ লম্বা। রং বাদামী সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। এরা পাতার নিচের পৃষ্ঠে থাকে। | কচি পাতা ও নরম কাণ্ড হতে রস চুসে খায় ও এক প্রকার বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে। এর ফলে পাতার অগ্রভাগ বাদামী বর্ণ ধারণ করে। আক্রান্ত পাতা কুকচে যায়। ফলে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, ফুল ও ফল ধারণ বাধাগ্রস্ত হয়। |
মিষ্টি আলু | মিষ্টি আলুর সুড়ঙ্গকারী পোকা | কাণ্ড , ডগা , কান্ডের গোঁড়ায় | - | ক্ষুদ্র কীড়া পাতার দুইপাশের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। তাই পাতার উপর আঁকা বাঁকা রেখার মত দাগ পড়ে এবং পাতা শুকিয়ে ঝড়ে যায়। |
মিষ্টি আলু | লেদা পোকা | পাতা , ডগা , কচি পাতা | ছোট ও কালচে রঙের | কীড়া পাতা ও কচি ডগা খেয়ে ফেলে। |
আলু | সুতলী পোকা | আগা , কাণ্ড , ডগা , ফল | পোকার মথ আকারে ছোট,রুপালি, ধুসর, ছোট ছোট সরু পশমের মতো ঝালরযুক্ত, সরু ডানা বিশিষ্ট । পেছনের পাখাজোড়া ফ্যাকাসে সাদা|পূর্ণাঙ্গ কীড়া সাদাটে বা হাল্কা গোলাপী বর্ণের এবং ১৫-২০ মি.মি লম্বা হয়ে থাকে।কীড়ার পিঠে হালকা সবুজ বা গোলাপি আভা আছে । | * কীড়া ডিম থেকে ফুটেই ১২-১৫ দিন আলুর পাতার সবুজ অংশ খেতে খেতে সুরঙ্গ করে কান্ডে ঢুকে। কান্ডে ঢুকলে কান্ডের আগা মরে যায় এবং পরে তা ভেঙোগ পড়ে। * মথ আলুর চোখের কাছে ডিম পাড়লে কীড়া ডিম থেকে ফুটেই ১২-১৫ দিন ধরে আলুর খেতে খেতে আলুর ভিতরে ঢুকে আলুর খোসার নিচে সুরঙ্গ তৈরি করে। এতে আলুর বাকি পচে যায় তাতে কীড়ার মলে ভরা থাকে। * সংরক্ষতি আলুতে ও ক্ষতি কর। |
আলু | জাব পোকা | কাণ্ড , পাতা , ডগা | পূর্ণ বয়সী পোকা ছোট, প্রায় মাথার উকুনের সমান। সবুজ/কাদামি রঙের। | পোকা পাতা, কান্ড ও ডগা থেকে রস চুষে খায়। আলুর পাতা মোড়ানো ভাইরাস এবং অন্যান্য ভাইরাস ছড়ায় । আক্রান্ত পাতা কুঁকড়ে যায় এবং হলুদ বা নানা রঙ ও অস্বাভাবিক আকার ধারণ করে। |
আলু | কাটুই পোকা | কাণ্ড , ডগা , সব , শিকড় | *পূর্ণ বয়সী পোকা মাঝারি আকারের ধূসর রঙের, তার মধ্যে কালছে ছোপ ছেপা ও ডোরা দাগ আছে পাখায় হাল্কা ঝালরের মত চিকন পশম থাকে। পুরষ মথ স্ত্রীর চেয়ে সরু। *কীড়া ৪০-৫০ মি.মি, বাদামি/ মেটে রঙ, মাথা কালচে বাদামি। দেহের পিছ বরাবর ও পাশে লম্বারম্বিভাবে হালকা ধূসর/ কাল রঙের বেখা আছে। শরীর তলৈাক্ত ও নরম | |পূণদিনের বেলায় মাটির নিচে লুকিয়ে থাকে, রাতে চারার গোড়া কেটে দেয়। আলু ছদ্রি করে। |
তরমুজ | জাব পোকা
| কাণ্ড , পাতা , ডগা , কচি পাতা , ফল , ফুল | পোকা দেখতে খুবই ক্ষুদ্র। এদের পাখা বা পাখাহীন উভয় অবস্থায় দেখা যায়। | গাছের কচি কাণ্ড, ডগা ও পাতার রস খেয়ে ক্ষতি করে। |
পাট | কাটুই বা লেদা পোকা | পাতা , ডগা , কচি পাতা | পূর্ণবয়স্ক পোকা একটি গাঢ় বাদামী রঙের মথ। সামনের পাখনা লম্বা, কম প্রসস্থ; গাঢ় বাদামী রঙের, প্রত্যেকটি পাখনায় তিনটি কালো ছাপ এবং কয়েকটি সাদা অসম দাগ রয়েছে। পিছনের পাখনা ধূসর সাদাটে।পূর্ণবয়স্ক কীড়া ১.৫ ইঞ্চি বা ৩.৮ সেমি লম্বা এবং কালচে সবুজ রঙের। এদের পিঠে কালচে বাদামী ও হলুদ রঙের দাগ আছে। এদের গায়ে শুঙ্গ থাকে না এবং দেহের পাশে দুই সারি সাদা ফোটা আছে। | বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি হতে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত এই পোকার আক্রমণ দেখা যায় । কাটুই বা লেদা পোকা শূককীট অবস্থায় পাট গাছের ক্ষতি করে। পোকা চারা গাছের কচি পাতা আক্রমণ করে পরে ডগা কেটে ফেলে। গাছের উচ্চতা ১২০-১৫০ সে। মি বা ৩-৪ মিঃ হওয়া পর্যন্ত এই আক্রমণ চলতে থাকে। প্রথমে শূককীটগুলি গাছের কচি পাতা ছিদ্র করে খায়। বড় হওয়ার সাথে সাথে সম্পূর্ণ পাতা খেতে থাকে। এই পোকা সাধারণতঃ দিনে মাটির নিচে থাকে এবং রাতে পাট গাছকে আক্রমণ করে। খাওয়ার পর এই পোকা আবার মাটিতে চলে যায়। এই পোকা মাঠের প্রায় ৮৫% পাট ফসল নষ্ট করে। ইহা ৌণ পোকা হিসাবে চিহ্নিত । |
পাট | ঘোড়া পোকা
| আগা , পাতা , ডগা , কচি পাতা | ডিম থেকে শূককীট বের হওয়ার পরপর এদের রং থেকে ঘিয়ে এবং ক্রমশ সবুজ হয় পুর্ণতাপ্রাপ্ত কীড়া প্রায় ১.৫ ইঞ্চি ও গায়ের রং সবুজ । পূর্ণবয়স্ক পোকা হালকা বাদামি রঙের মথ। সামনের পাখার ফোঁটা ও আঁকাবাঁকা কাল দাগ আছে। পুরুষ মথের শুঙ্গ পেকটিনেট ও স্ত্রী মথের শুঙ্গ সুত্রাকার ধরনের। | বৈশাখের শুরু হতে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত জৈষ্ঠের মাঝামাঝি হতে আষাঢ়ের মাঝামাঝি পোকার সংখা মারাত্মক ভাবে বাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বের হওয়ার পর পরই এরা পাট গাছের কচি ডগা ও পাতা আক্রমন করে। প্রথম অবস্থায় পাতা ছিদ্র করে খায় এবং বড় হতে থাকলে পুরো পাতা খেয়ে ফেলে। কোন কোন সময় কচি ডগা খেয়ে ফেলে এবং বারংবার কচি ডগাকে আক্রমন করার ফলে গাছের আগা নষ্ট হয়ে যায় এবং শাখা- প্রশাখা বের হয়। এতে পাটের ফলন ও আঁশের গুনগত মান কমে যায় । ইহা মুখ্য পোকা হিসাবে চিহ্নিত ।
|