ফসল | পোকামাকড় নাম | ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে | পোকামাকড় চেনার উপায় | প্রধান ক্ষতির লক্ষণ |
---|
মুগ | সাদা মাছি | আগা , কাণ্ড , কচি পাতা | সাদা মাছি পোকা খুব ছোট (প্রায় ১ মিলিমিটার লম্বা) ও দেহ খুব নরম। স্ত্রী মাছি পোকা একটু বড়। গায়ে মোমের মতো আবরণ থাকে বলে সাদা দেখায়।
| গাছের রস চুষে খাওয়ার ফলে গাছ শুকিয়ে যায় । এই পোকা এক ধরণের রস ছড়িয়ে দেয়, যেখানে বিভিন্ন ছত্রাক আক্রমণ করে । ফলে দূর থেকে আক্রান্ত গাছকে নিস্তেজ ও কালো দেখায়। গাছের বৃদ্ধি খুবই কম হয়। তাছাড়া এই পোকা মুগ ও মাসকলাইয়ে হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ ছড়ায়।
|
কলা | কলা গাছের কান্ডের উইভিল | আগা , কাণ্ড , পাতা , কান্ডের গোঁড়ায় | পূর্ণবয়স্ক পোকা ১০.০-১৩.০ মিমি লম্বা । বাচ্চা ৮-১২ মিমি লম্বা । পূর্ণবয়স্ক পোকার রং চকচকে কালো। উপরের শক্ত আব রণ কিছুটা খাটো। মুচখভ দুই পাশে শুড় আছি। বাচ্চা হাল কা হলদে সাদা, মজবুত , মাংশাল, পাহীন,গুটিয়ে থাকে। | পূর্ণবয়স্ক উইভিল কলা গাছের গোড়ায় শিকড়ের উপর ডিম পাড়ে । ডিম ফুটে গ্রাব (বাচ্চা) বের হয় এবং ভেতরে ঢুকে যায় । ক্রমেই এটি উপর দিকে উঠে ও কান্ডের মাঝে কুরে কুরে খায় ও আক্রান্ত অংশ পচে যায় । আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে ডগার পাতা শুকিয়ে যায় এবং কোন কলা হয় না এবং গাছ মরে যায় । |
রসুন | রসুনের থ্রিপস পোকা | আগা , পাতা , কচি পাতা | পোকা ২-৩ মিমি, স্ত্রী পোকা সরু, হলুদাভ। পুরুষ গাঢ় বাদামী । বাচ্চা পোকা হলুদ অথবা সাদা । এদের পিঠের উপর লম্বা দাগ দেখা যায়। | পোকা গাছের কচি পাতা ও পুষ্পমঞ্জুরির রস চুষে খায় বলে পাতা রূপালী রং ধারণ করে অথবা ক্ষুদ্রাকৃতির বাদামী দাগ বা ফোটা দেখা যায়। আক্রমণ বেশী হলে পাতা শুকিয়ে মরে যায়। কন্দ আকারে ছোট ও বিকৃত হয়। |
পটল | পটলের সাদা মাছি পোকা | আগা , পাতা , ডগা , সব , ফল , শিকড় , কান্ডের গোঁড়ায় | - | পূর্ণ বয়স্ক ও বাচ্চা উভয়ই ক্ষতি করে । চারা গাছ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত এরা পাতার রস খায় । আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয় ।পাতা কুকড়ে যায়।
|
পটল | পটলের পাতামোড়ানো পোকা | আগা , কাণ্ড , পাতা , কচি পাতা , কান্ডের গোঁড়ায় | - | * ক্ষেত পরিস্কার পরচ্ছন্ন রাখুন । * ক্ষেতে ডাল পুতে পাখি বসার ব্যবস্থা করুন ( বিঘা প্রতি ৮-১০ টি) * নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করে আক্রমণের শুরুতেই ব্যবস্থা নিন
|
মসুর | জাব পোকা | আগা , পাতা , ফল , ফুল | - | পাতা, ফুল ও কচি ফলের রস চুষে খায়
|
আলু | সুতলী পোকা | আগা , কাণ্ড , ডগা , ফল | পোকার মথ আকারে ছোট,রুপালি, ধুসর, ছোট ছোট সরু পশমের মতো ঝালরযুক্ত, সরু ডানা বিশিষ্ট । পেছনের পাখাজোড়া ফ্যাকাসে সাদা|পূর্ণাঙ্গ কীড়া সাদাটে বা হাল্কা গোলাপী বর্ণের এবং ১৫-২০ মি.মি লম্বা হয়ে থাকে।কীড়ার পিঠে হালকা সবুজ বা গোলাপি আভা আছে । | * কীড়া ডিম থেকে ফুটেই ১২-১৫ দিন আলুর পাতার সবুজ অংশ খেতে খেতে সুরঙ্গ করে কান্ডে ঢুকে। কান্ডে ঢুকলে কান্ডের আগা মরে যায় এবং পরে তা ভেঙোগ পড়ে। * মথ আলুর চোখের কাছে ডিম পাড়লে কীড়া ডিম থেকে ফুটেই ১২-১৫ দিন ধরে আলুর খেতে খেতে আলুর ভিতরে ঢুকে আলুর খোসার নিচে সুরঙ্গ তৈরি করে। এতে আলুর বাকি পচে যায় তাতে কীড়ার মলে ভরা থাকে। * সংরক্ষতি আলুতে ও ক্ষতি কর। |
পেঁয়াজ | পেঁয়াজের ঘোড়া পোকা | আগা , পাতা , ডগা , কচি পাতা , সব | অল্পবয়সী পোকা এক ধরনের মথ। ডিম ফুটে সবুজ রঙের ২-২.৫ সেমি কীড়া ফলের ভিতরে বাস করে।
| পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ক্ষতি করে। |
মরিচ | ক্ষুদে মাকড় (মাইট)
 | আগা , কাণ্ড , পাতা , কান্ডের গোঁড়ায় | এ পোকা দেখতে অত্যন্ত ছোট, সাধারণত হাত লেন্সের সাহায্য ছাড়া দেখা যায় না। পোকা উপবৃত্তাকার, উজ্জ্বল, হলদে সবুজ বর্ণের আট পা বিশিষ্ট।
| মাইট গাছের রস শোষণ করে এবং পানি স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়। পাতা ফ্যাঁকাসে, মোচড়ানো এবং নিচের দিকে নৌকার মত বাঁকানো হয়। পাতা চামড়ার মত হয়ে যায় এবং শিরাগুলো মোটা হয়। পাতা এবং কচি কাণ্ড লালচে বর্ণের হয়। ফুলের কুঁড়ি বাঁকানো এবং মোচড়ানো হয়। পাতার নিচের পৃষ্ঠে জাল দেখা যায়।
|
মুগ ডাল | সাদা মাছি পোকা
 | আগা | সাদা মাছি পোকা খুব ছোট (প্রায় ১ মিলিমিটার লম্বা) ও দেহ খুব নরম। স্ত্রী মাছি পোকা একটু বড়। গায়ে মোমের মতো আবরণ থাকে বলে সাদা দেখায়। | এই পেকা এক ধরণের মধু ছড়িয়ে দেয় যেখানে বিভিনন্ন ছত্রাক আক্রমণ করে। |
পাট | স্টেম গার্ডলার | আগা | পূর্ণবয়স্ক পোকা এক ধরণের বিটল। পূর্ণবয়স্ক পোকা এবং শূককীট উভয়েই গাছের জন্য ক্ষতিকারক। স্টেম গার্ডলারের শূককীট অর্ধনলাকার এবং হলুদ রঙের। এদের মাথা কিছুটা লম্বা, শুঙ্গ ছোট এবং মাথা দুভাগে বিভক্ত। | বাকল কেটে বৃত্ত তৈরির করার ফলে গাছের ডগা ঢলে পড়ে ও শেষ পর্যন্ত মারা যায়। |
পাট | ঘোড়া পোকা
 | আগা , পাতা , ডগা , কচি পাতা | ডিম থেকে শূককীট বের হওয়ার পরপর এদের রং থেকে ঘিয়ে এবং ক্রমশ সবুজ হয় পুর্ণতাপ্রাপ্ত কীড়া প্রায় ১.৫ ইঞ্চি ও গায়ের রং সবুজ । পূর্ণবয়স্ক পোকা হালকা বাদামি রঙের মথ। সামনের পাখার ফোঁটা ও আঁকাবাঁকা কাল দাগ আছে। পুরুষ মথের শুঙ্গ পেকটিনেট ও স্ত্রী মথের শুঙ্গ সুত্রাকার ধরনের। | বৈশাখের শুরু হতে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত জৈষ্ঠের মাঝামাঝি হতে আষাঢ়ের মাঝামাঝি পোকার সংখা মারাত্মক ভাবে বাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বের হওয়ার পর পরই এরা পাট গাছের কচি ডগা ও পাতা আক্রমন করে। প্রথম অবস্থায় পাতা ছিদ্র করে খায় এবং বড় হতে থাকলে পুরো পাতা খেয়ে ফেলে। কোন কোন সময় কচি ডগা খেয়ে ফেলে এবং বারংবার কচি ডগাকে আক্রমন করার ফলে গাছের আগা নষ্ট হয়ে যায় এবং শাখা- প্রশাখা বের হয়। এতে পাটের ফলন ও আঁশের গুনগত মান কমে যায় । ইহা মুখ্য পোকা হিসাবে চিহ্নিত ।
|