ফসল | পোকামাকড় নাম | ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে | পোকামাকড় চেনার উপায় | প্রধান ক্ষতির লক্ষণ |
---|
চীনাবাদাম | জ্যাসিড / শোষক পোকা | পাতা | ক্ষুদ্র সবুজ পোকা। এদের দেহ লম্বা। রং বাদামী সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। এরা পাতার নিচের পৃষ্ঠে থাকে। | এর ফলে পাতার অগ্রভাগ বাদামী বর্ণ ধারণ করে। আক্রান্ত পাতা কুকচে যায়। |
মুগ ডাল | বিছা পোকা
| সব | পূর্ণ বয়স্ক মথ মাঝারি হালকা হলুদ রঙের ও পাখায় কালো দাগ থাকে।কীড়া দেখতে কমলা রঙের, ৬-৮ ইঞ্চি লম্বা। | কীড়ায় খাওয়ার ফলে পাতা জালের মতো হয়ে যায় এবং দূর থেকেই চেনা যায়। |
মুগ ডাল | সাদা মাছি পোকা
| আগা | সাদা মাছি পোকা খুব ছোট (প্রায় ১ মিলিমিটার লম্বা) ও দেহ খুব নরম। স্ত্রী মাছি পোকা একটু বড়। গায়ে মোমের মতো আবরণ থাকে বলে সাদা দেখায়। | এই পেকা এক ধরণের মধু ছড়িয়ে দেয় যেখানে বিভিনন্ন ছত্রাক আক্রমণ করে। |
মুগ ডাল | ফল ছিদ্রকারী পোকা
| সব | এ পোকার মথ বড় (প্রায় ১ ইঞ্চি)। বাদামী রঙের মথগুলো রাতে সক্রিয় হয়। পূর্ণবয়স্ক কীড়া ১.৫ থেকে ২ ইঞ্চি। | ফল আসার পরে কীড়া বড় হয়ে ফলের ভেতর ঢুকে বীজ খেয়ে ফেলে। |
তরমুজ | পামকিন বিটল
| সব | এ পোকা দেখতে ক্ষুদ্র লাল রঙের | পূর্ণবয়স্ক পোকা গাছের পাতা ফুটো করে এবং পাতার কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করে সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ফেলে। এই পোকা বয়স্ক গাছের শিরা উপশিরাগুলো রেখে পাতার সম্পূর্ণ সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। এ পোকা ফুল ও কচি ফলে আক্রমণ করে। |
তরমুজ | থ্রিপস | পাতা | পূর্ণবয়স্ক ও বাচ্চা পোকা পাতা থেকে রস চুসে খায়। ফলে ফলন কমে যায়। | পূর্ণবয়স্ক ও বাচ্চা পোকা পাতা থেকে রস চুসে খায়। ফলে ফলন কমে যায়।
|
পাট | স্টেম গার্ডলার | আগা | পূর্ণবয়স্ক পোকা এক ধরণের বিটল। পূর্ণবয়স্ক পোকা এবং শূককীট উভয়েই গাছের জন্য ক্ষতিকারক। স্টেম গার্ডলারের শূককীট অর্ধনলাকার এবং হলুদ রঙের। এদের মাথা কিছুটা লম্বা, শুঙ্গ ছোট এবং মাথা দুভাগে বিভক্ত। | বাকল কেটে বৃত্ত তৈরির করার ফলে গাছের ডগা ঢলে পড়ে ও শেষ পর্যন্ত মারা যায়। |
পাট | কাতরি পোকা (Indigo caterpillar) | কাণ্ড , পাতা , কচি পাতা | পূর্ণ বয়স্ক মথের রঙ কালো পাখা ধূসর বাদামী রঙের পাখার উপর কালো ফোটা আছে। পিছনের পাখা জোড়া কমলা রঙের। মথের পাখার উপরের শিরা ও কিনারা বরাবর অনেকগুলো ছোট ছোট কালো ফোটা আছে এবং ফোটাগুলো একত্রে মিশে মোটা কালো দাগের সৃষ্টি করে। এ মথের কীড়া প্রাথমিক অবস্থায় রং সবুজ, ক্রমেই বাদামী ও পরে কালো রঙের হয়। এদের শরীর ঘন শুঙ্গ দ্বারা আবৃত থাকে। পুনাঙ্গ কীড়া লম্বায় ৪ সেমিঃ। | জুন মাসের প্রথম হতে জুলাই মাস পর্যন্ত আক্রমণ করে থাকে । প্রাথমিক অবস্থায় কীড়া পাতার সবুজ অংশ খায় এবং ক্রমেই বড় হতে থাকে পরে পাতা খায় ও গাছের বৃদ্ধি প্রতিহত করে। এ পোকা গাছের গৌণ পোকা হিসেবে চিহ্নিত। |
পাট | লাল মাকড় ( Red Mite) | সব | লাল মাকড় সাধারণত বয়স্ক এবং নাবী পাট বীজ ফসলে আক্রমণ করে থাকে। পূর্নাজ্ঞ স্ত্রী মাকড় খুবই ক্ষুদ্র লাল রঙের তবে খালি চোখে এদেরকে গাছের পাতার উল্টোদিকে দেখতে পাওয়া যায়। এরা ডিম্বাকৃতি ও লম্বায় ০.৪৮ মি মি। পুরুষ মাকড় পীতাভ লাল, লম্বায় ০.৩২ মি মি। পাতার উল্টোদিকে লাল মাকড় সূক্ষ্ম জাল তৈরি করে। | জুলাই হতে আগস্ট মাস পর্যন্ত আক্রমনের সময় ।প্রথমে এরা পরিপক্ক পাতার উল্টোদিকে বসে রস চুসে খায়, ফলে পাতা হলদে রং ধারণ করে। এরা গাছের নিচের দিকের পাতা খেতে খেতে উপরের দিকে উঠে এবং আক্রমণ ব্যাপক হলে এরা গাছের কচি পাতার রসও খেয়ে ফেলে। ফলে গাছের সব পাতা হলুদ বর্ণের হয়ে যায় এবং পাতা ঝরে পড়ে। লাল মাকড় পাটের জন্য গৌণ ক্ষতিকারক হিসেবে পরিচিত। |
পাট | কাটুই বা লেদা পোকা | পাতা , ডগা , কচি পাতা | পূর্ণবয়স্ক পোকা একটি গাঢ় বাদামী রঙের মথ। সামনের পাখনা লম্বা, কম প্রসস্থ; গাঢ় বাদামী রঙের, প্রত্যেকটি পাখনায় তিনটি কালো ছাপ এবং কয়েকটি সাদা অসম দাগ রয়েছে। পিছনের পাখনা ধূসর সাদাটে।পূর্ণবয়স্ক কীড়া ১.৫ ইঞ্চি বা ৩.৮ সেমি লম্বা এবং কালচে সবুজ রঙের। এদের পিঠে কালচে বাদামী ও হলুদ রঙের দাগ আছে। এদের গায়ে শুঙ্গ থাকে না এবং দেহের পাশে দুই সারি সাদা ফোটা আছে। | বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি হতে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত এই পোকার আক্রমণ দেখা যায় । কাটুই বা লেদা পোকা শূককীট অবস্থায় পাট গাছের ক্ষতি করে। পোকা চারা গাছের কচি পাতা আক্রমণ করে পরে ডগা কেটে ফেলে। গাছের উচ্চতা ১২০-১৫০ সে। মি বা ৩-৪ মিঃ হওয়া পর্যন্ত এই আক্রমণ চলতে থাকে। প্রথমে শূককীটগুলি গাছের কচি পাতা ছিদ্র করে খায়। বড় হওয়ার সাথে সাথে সম্পূর্ণ পাতা খেতে থাকে। এই পোকা সাধারণতঃ দিনে মাটির নিচে থাকে এবং রাতে পাট গাছকে আক্রমণ করে। খাওয়ার পর এই পোকা আবার মাটিতে চলে যায়। এই পোকা মাঠের প্রায় ৮৫% পাট ফসল নষ্ট করে। ইহা ৌণ পোকা হিসাবে চিহ্নিত । |
পাট | হলুদ মাকড়
| কাণ্ড , পাতা | পূর্ণ বয়স্ক মাকড় আকারে খুবই ক্ষুদ্র ( ০.১৭ মি মি ও ০.০৯ মি মি চওড়া) এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে এদের দেখা যায় না। স্ত্রী মাকড় প্রথমে সাদা থাকে। পরে আস্তে আস্তে হলুদ বর্ণের হয়। এই জন্য এদের কে সাদা মাকড়ও বলা হয়। স্ত্রী মাকড় ডিম্বাকৃতি এবং শরীরের উপরে মাঝখানে লম্বালম্বি একটা সাদা দাগ আছে। এদের চারজোড়া পা আছে। পুরুষ মাকড়ের শরীর মাঝখানে চওড়া এবং পিছন দিকে সরু। সাধারণত এরা পিছন দিক উচু করে রাখে।
| এপ্রিল হতে সেপ্টেম্বর এই সম্যে আক্রমণ করে । ইহা মুখ্য মাকড় হিসাবে চিহ্নিত । হলুদ মাকড় আগার কচি পাতার নিচের দিকে থাকে এবং আক্রমণ করে । কচি পাতার রস চুষে খায়। এতে পাতা কুকড়ে যায় এবং তামাটে রং ধারন করে । শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত পাতা পরে যায় । আক্রমণ বেশী হলে পাতা ঝরে পড়ে, গাছের ডগা নষ্ট হয়ে যায় । ফলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় ও পড়ে শাখা-প্রশাখা বের হয় । হলুদ মাকড়ের আক্রমণ গাছের বৃদ্ধি ১৫-১৬ সেমি পর্যন্ত কমে যেতে পারে ।
|
পাট | ঘোড়া পোকা
| আগা , পাতা , ডগা , কচি পাতা | ডিম থেকে শূককীট বের হওয়ার পরপর এদের রং থেকে ঘিয়ে এবং ক্রমশ সবুজ হয় পুর্ণতাপ্রাপ্ত কীড়া প্রায় ১.৫ ইঞ্চি ও গায়ের রং সবুজ । পূর্ণবয়স্ক পোকা হালকা বাদামি রঙের মথ। সামনের পাখার ফোঁটা ও আঁকাবাঁকা কাল দাগ আছে। পুরুষ মথের শুঙ্গ পেকটিনেট ও স্ত্রী মথের শুঙ্গ সুত্রাকার ধরনের। | বৈশাখের শুরু হতে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত জৈষ্ঠের মাঝামাঝি হতে আষাঢ়ের মাঝামাঝি পোকার সংখা মারাত্মক ভাবে বাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বের হওয়ার পর পরই এরা পাট গাছের কচি ডগা ও পাতা আক্রমন করে। প্রথম অবস্থায় পাতা ছিদ্র করে খায় এবং বড় হতে থাকলে পুরো পাতা খেয়ে ফেলে। কোন কোন সময় কচি ডগা খেয়ে ফেলে এবং বারংবার কচি ডগাকে আক্রমন করার ফলে গাছের আগা নষ্ট হয়ে যায় এবং শাখা- প্রশাখা বের হয়। এতে পাটের ফলন ও আঁশের গুনগত মান কমে যায় । ইহা মুখ্য পোকা হিসাবে চিহ্নিত ।
|
পাট | চেলে পোকা | পাতা , ডগা , কচি পাতা | পূর্ণবয়স্ক পোকা ধূসর কাল রঙের উইভিল। লম্বায় প্রায় ২ মিঃলিঃ। সারা গায়ে সাদা সূক্ষ্ম কাটা আছে। এ পোকার সম্মুখে ছোট বাঁকা শুঁড় আছে। অগ্রবক্ষ লম্বা চওড়ায় সমান এবং পিছনের দিক গোলাকৃতির। সদ্যজাত কীড়া (গ্রাব) সাদা রঙের এদের কোন পা নেই দেখতে “c” এর মত বাঁকা পুর্ণাজ্ঞ কীড়ার দীর্ঘ ৩ মিমিঃ এবং প্রস্থ ১মিমিঃ । | এপ্রিল মাস হতে জুলাই মাস পর্যন্ত পাট ক্ষেতে এবং আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে বীজ পাট ক্ষেতে আক্রমণ করে। পাটের চারা যখন ১২-১৫ সেমিঃ লম্বা হয় তখন এ পোকার আক্রমন হয়। চারা অবস্থায় এরা আলপিনের মত সূক্ষ্ম ছিদ্র করে পাতা খায় ।স্ত্রী পোকা শুঁড় দ্বারা গাছের ডগা ও গিটে ছিদ্র করে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বের হয়। এরা কাণ্ড ছিদ্র করে কাণ্ডের ভিতেরে চলে যায় এবং কাণ্ডের ছাল ও অন্যান্য কলা (টিস্যু) খেয়ে কাণ্ডের ভিতর মজ্জাতে প্রবেশ করে বড় হতে থাকে। আক্রান্ত স্থান হতে এক প্রকার আঠালো পদার্থ বের হয় এবং কীড়ার মলের সাথে মিশে শক্ত গিঁটের সৃষ্টি করে। পাট পচানোর সময় গিঁট পচে না। কোন কোন সময় ফল ও পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়। ইহা মুখ্য মাকড় হিসাবে চিহ্নিত । |
টমেটো | সাদা মাছি
| পাতা , কচি পাতা | সাদা মাছি পোকা খুব ছোট (প্রায় ১ মিলিমিটার লম্বা) ও দেহ খুব নরম। স্ত্রী মাছি পোকা একটু বড়। গায়ে মোমের মতো আবরণ থাকে বলে সাদা দেখায়। | পাতার রস চুষে খায় |