ফসল | রোগের নাম | রোগের কারণ | ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে | প্রধান ক্ষতির লক্ষণ |
---|
আলু | পাতা মোড়ানো রোগ | পাতা মোড়ানো ভাইরাস জাব পোকা | কাণ্ড , পাতা | আক্রান্ত পাতা খস খসে , খাড়া ও উপরের দিকে মুড়ে যায়। আগার পাতার রঙ হালকা সবুজ হয়, গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়। কখনো পাতার কিনারা লালচে বেগুনি রঙের হয়। গাছ খাটো হয় এবং সোজা হয়ে দাড়েয়ে থাকে। গাছ নাড়া দিলে ঝন ঝন শব্দ হয় । আলু আকারে ছোট ও সংখ্যায় কম হয় |
আলু | নেতিয়ে পড়া রোগ(ডেমপিং অফ) | Sclerotium rolfsi নামক ছত্রাক | কাণ্ড , কান্ডের গোঁড়ায় | চারার গোড়া পচে মরে যায় । অনেক সময় সব চারা গাছ মরে শুকিয়ে যায় । |
আলু | আলুর দাঁদ রোগ | Streptomyces scabies নামক ব্যাক্টিরিয়া | ফল | দাঁদ রোগে আলুর টিউবারের উপরে উঁচু অমসৃণ, এবং ভাসা বিভিন্ন আকারের বাদামি খসখসে দাগ পড়ে। আক্রমন বেশী হলে পুরো টিউবারই দাগে ভরে যায়। |
আলু | আলুর কালো পা বা নরম পচা রোগ | Erwinia carotovora নামক ব্যাক্টিরিয়া | কাণ্ড , ফল | মাঠে গাছের গোড়ায় কালো দাগ পড়লে তাকে কালো পা এবং গাছ ও টিউবার আক্রান্ত হলে নরম পচা রোগ বলে । আক্রান্ত গাছের টিউবার পচে যায় । সংরক্ষিত আলুতে এ রোগে আক্রান্ত আলু পচে যায় এবং পচা আলুতে এক ধরণের উগ্র গন্ধের সৃষ্টি হয়। চাপ দিলে আলু থেকে রস বেরিয়ে আসে যা অন্য সুস্থ আলুকে আক্রমন করে । আক্রান্ত অংশ বাদামি রংয়ের ও নরম হয় যা সহজেই সুস্থ অংশ থেকে আলাদা করা যায় |
আলু | আগাম ধ্বসা (আর্লি ব্লাইট রোগ) | Alternaria solani নামক ছত্রাক | কাণ্ড , পাতা , ডগা | প্রথমে নিচের পাতায় ছোট ছোট কাল থেকে বাদামি চক্রাকার দাগ দেখা যায়। দাগের চারিদিক হলুদ সবুজ বলয় দেখা যায়। যা দেখতে আনেকটা গো- চোখের মত। আক্রমন বেশি হলে অনেকগুলো দাগ একত্রে মিশে যায়। গাছ হলদে হয়ে পাতা নুয়ে পড়ে , অকালে মারা যায়। |
আলু | আলুর মড়ক বা নাবী ধ্বসা (লেইট ব্লাইট) | Phytophtora infestans নামক ছত্রাক | আগা , কাণ্ড , পাতা , ডগা , কচি পাতা , ফল , শিকড় , কান্ডের গোঁড়ায় | আক্রমনে প্রথমে পাতায় ছোপ ছোপ বা ভেজা ভেজা ফ্যাকাসে গোলাকার বা এলোমেলো দাগ দেখা দেয় । গাছের কান্ড এবং টিউবারেও রোগের আক্রমন দেখা যায় । পাতার নিচে সাদা সাদা পাউডারের মত ছত্রাক দেখা যায় ।পাতার উপরে বাদামি দাগ গুলো বেড়ে বৃত্তাকার রেখার সৃষ্টি করে পরে পাতা ও কান্ড শুকিয়ে যায়।এসময় মনে হয় যেন জমির ফসল পুড়ে গেছে। কম তাপমাত্রা এবং কুয়াশাযুক্ত আবহাওয়ায় আক্রান্ত গাছের পুরো লতাপাতা ও কান্ড পচে যায় এবং ২-৩ দিনের মধ্যেই সমস্ত গাছই মেরে ফেলতে পারে । আক্রান্ত ক্ষেতে পাতা পচার পোড়া গন্ধ পাওয়া যায় । |
পেঁয়াজ | হোয়াইট রট | ছত্রাক
| পাতা , কান্ডের গোঁড়ায় | এ রোগের আক্রমণে পুরাতন পাতা হলুদ হয়ে নেতিয়ে পড়ে। শিকড় ও কন্দের বাইরের আবরণে পচন ধরে। একধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়। |
লাউ | মোজাইক ভাইরাস রোগ | ভাইরাস | পাতা , ফল | চারা গজানো গাছের পাতায় হলুদ ও গাঢ় সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইক করা পাতা দেখা দেয়। |
টমেটো | লিফকার্ল বা কুঁকড়ানো
| ভাইরাস | পাতা , ফুল , সম্পূর্ণ গাছ | এই রোগে আক্রান্ত গাছ খর্বাকৃতি হয়। পাতার গায়ে ঢেউয়ের মত ভাজের সৃষ্টি হয় ও পাতা ভীষণ ভাবে কোকড়ায়ে যায়। বয়স্ক পাতা পুরু ও মচমচে হয়ে যায়। আক্রমণের তীব্রতা বেশি হলে পাতা মরে যায়। গাছে অতিরিক্ত শাখা প্রশাখা বের হয় এবং গাছ ফুল ও ফল ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। |
টমেটো | বুশি স্টান্ট ( লিফ হপার নামক পোকা দ্বারা ছড়ায়)
| ভাইরাস | পাতা , কচি পাতা , সব | এ রোগে গাছ আক্রান্ত হলে গাছের উপরের অংশ কুকড়ায়ে যায়। পাতা মুড়িয়ে যায় ও চামড়ার ন্যায় পুরু মনে হয়। |
পাট | পাতায় সাদা গুঁড়া পড়া রোগ (Powdery Mildew)
| ছত্রাক
| পাতা | পাতার উপর গোলাকার ও সাদা পাউডারের মত অসংখ্য রোগের জীবাণু দেখা যায়। গাছের পাতা সাদা গুড়ায় ঢেকে যায়। রোগে আক্রান্ত পাতা কয়েক দিনের মধ্যে বাদামী রং ধারণ করে। পাতার সংখ্যা কমে যায় এবং পাতার আকৃতি ছোট হয়। কখনও রোগের জীবাণু পাতা থেকে কাণ্ডে ও ফুলে ছড়িয়ে যায় এবং গাছ হলুদ ও দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে গাছের পাতা শুকিয়ে যায় ও গাছ মারা যায়। আক্রান্ত গাছের ফল অকালে পেকে যায়। আঁশের মান খারাপ হয়ে যায়। দেশি পাটে এ রোগের আক্রমণের তীব্রতা বেশি।
|
পাট | গোঁড়া পচা (Soft Rot)
| ছত্রাক
| কান্ডের গোঁড়ায় | ভেজা তোলার মত এক ধরনের ছাতা গাছের গোড়ার চার পাশে বেড়ে ওঠে । ক্রমেই সরিষা বীজের মত ছত্রাকের বহু দানার সৃষ্টি হয় । গাছ গোড়া থেকে ঊপরের দিকে বাদামি রঙ ধারন করে । অবশেষে গোড়া পচে গাছ মাটিতে ঢেলে পড়ে যায় ।
|
পাট | মোজাইক (Mosaic)
| ভাইরাস
| পাতা | সাধারণত দেশি পাটের জাতে এ রোগটি বেশি দেখা যায়। পাতার মধ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে হলুদ ও সবুজ ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। রোগের আক্রমণ বেশি হলে পাতা কিছুটা কুঁকড়ে যায় এবং গাছ বেটে হয়ে যায়। আক্রান্ত পাতা ভঙ্গুর ও ফ্যাঁকাসে হয়। সাদ মাছি এ রোগ বিস্তার করে ।
|